দীর্ঘ ৩৮ বছর চাকরি করার পর আজ রকিব সাহেব রিটায়ার্ড হলো।সেই চব্বিশ বছর বয়স থেকে সে এই চাকরিটা করছে আজ তার বয়স ৬২ বছর।তাই বাসায় এসে সস্তি বোধ করলেন।বউ রেহানাকে ডাক দিলেন:
.
-রেহানা!রেহানা।
রান্নাঘর থেকে ঘামটা মুছতে মুছতে আসলেন।
-(হাসিমুখে)হ্যা বলো?
সোফা থেকে হেলান ছেড়ে বললো:
-না কিছুনা।অনেকদিন পরে নিজেকে অনেক ফ্রি মনে হচ্ছে।
রকিব সাহেবের হাতের উপর হাতটা রেখে হাসি দিয়ে বললেন:
-হ্যা রিটায়ার্ড হয়েছ যে তাই।
-মনটা খারাপ লাগছে।যেই মানুষগুলার সাথে এতদিন রইলাম তাদের সাথে আর কাল থেকে দেখা হবে না।
-চিন্তা করো না তারা সবসময় তোমার পাশেই থাকবে (মুচকি হাসি)।
-(সস্তির নিশ্বাস নিয়ে)হুমম।
-যাও এখন হাতমুখ ধুয়ে টেবিলে আসো।
-রানা এসেছে?
-না।বলেছে লেট হবে।তুমি যাওতো।
.
গিয়ে অফিসের কাপড়টা ছেড়ে লুংঙি আর টি-শার্ট টা পড়ে খেতে বসল রকিব সাহেব।খাবারের মাঝে ছোট খাট একটা আড্ডা হলো।কিভাবে রকিব সাহেবকে সবাই বিদায় দিলো তা রকিব সাহেব জানালেন।
.
একটু পর রানা এলো।ছেলেকে দেখে একটা দাতদেখা হাসি দিলো রকিব সাহেব।তারপর ঘুমাতে গেলো রকিব সাহেব।রেহানা কিছুক্ষন পর এলো।গেটটা লাগিয়ে দিয়ে শুরু হলো তাদের গল্পলাপ।হঠাৎ রকিব সাহেব জিজ্ঞাস করলেন:
.
-আচ্ছা তোমার আর আমার বিয়ে হয়েছে কয় বছর?
-এইত কত আর হবে।৪০-৪২ তো হবেই।
-এত বছর পার হয়ে গেল কিন্তু কখনও তোমাকে নিয়ে মনের মতো বেড়াতে যেতে পারলাম না।
-(হাসি দিয়ে)এখন কি এই বুড়ো বয়সে আমাকে নিয়ে বেড়াবে নাকি।
-বেড়ালে সমস্যা কি?
-এহ লোকে কি বলবে?
-কি বলবে আমার বউ নিয়ে আমি বেড়াব।তাতে আবার লোকে কি বলার?
-হ্যা পারবে কিন্তু সকালের মর্নিং ওয়াল্ক এ যেতে।
-আমি আসলে এখন ফ্রি।
-কিসের ফ্রি?ফ্রি এখনো হতে পারো নি।ছেলেটাকে বিয়ে করাবে তারপর যখন নাতি-নাতিন নিয়ে খেলবে তখন মনে করবে ফ্রি।
-হ্যা।তাইতো।রানার কি কোন মেয়ে পছন্দ আছে কি না জানো নাকি।
-না নেই।থাকলে ও অবশ্যই বলতো।
-হ্যা।তোমাকে তো বলবেই।
-বলবে না ছেলে কার দেখতে হবে না।
-তোমার ছেলে বলে কথা।
দুজনেই হাসতে শুরু করল।তারপর ওইদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়ল।
.
[বিঃদ্রঃপরের পর্ব ইনশাল্লাহ শুক্রবারে দেয়া হবে]
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




